ছবিটা মুম্বাইয়ের এক কোটিপতি মহিলার মৃতদেহ। কোটিপতি NRI পুত্রের মাতা, ১০ মাস আগে মারা গিয়েছিলেন। কোটি টাকার ফ্ল্যাট থেকে মহিলার কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে।
আমেরিকার নামীদামী কোম্পানীর উঁচু মানের ইঞ্জিনিয়ার "ঋতুরাজ সাহানী" জানেন না, তাঁর মা আশা সাহানী ঠিক কবে মারা গেছেন।
তবে ঋতুরাজের বয়ান অনুযায়ী, তিনি মায়ের সঙ্গে শেষবারের মতো কথা বলেছিলেন প্রায় ১ বছর ৩ মাস আগে। ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৬ সালে আশা সাহানী নিজের বৃদ্ধাকালের একমাত্র সহায় প্রাণপ্রিয় পুত্রকে অনুরোধ করেছিলেন, হয় তাকে আমেরিকায় নিয়ে যেতে, নিয়েও গিয়েছিল ছেলে কিন্তু সেখানে তার থাকা হয়নি। বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসতেও
ব্যস্ত ইঞ্জিনিয়ার পুত্র, সময় বের করে উঠতে পারেনি।
আশা সাহানীর মৃত্যুর পরে একটা সময় মোবাইলের চার্জও শেষ হয়ে বন্ধ হয়ে যায়। তাই ছেলেও আর ফোনে মাকে পায় না। ঋতুরাজ ফ্ল্যাটের সোসাইটির কাছে অনুরোধ করেছিলেন বিষয়টা, কিন্তু সোসাইটি সেভাবে গুরুত্ব দেয়নি। ওদিকে ঋতুরাজ ডিভোর্স ও সন্তানের দায়িত্ব নিজের কাছে নিতে কোর্টে দৌড়াচ্ছেন। তাই একবছর সময়ই হয়নি আসার।
অবশেষে, ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে রবিবার সকালে, ঋতুরাজ মুম্বাই এয়ারপোর্ট থেকে সোজা চলে আসেন মায়ের সঙ্গে দেখা করতে। বহু ডাকাডাকির পরেও সাড়া না পেয়ে, তিনি চাবিওয়ালা এনে ডুপ্লিকেট চাবি বানিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে দেখে আশা সাহানীর শুধু কঙ্কাল অবশিষ্ট আছে। আশা সাহানী আত্মহত্যার নোট রেখে গিয়েছিলেন।
২০১৩ সালে স্বামী মারা যাবার পরে সম্পূর্ণ একা হয়ে গিয়েছিলেন তিনি।ঋতুরাজ ছিলেন তার একমাত্র ছেলে ।
৬৩ বছরের আশা দেবী মুম্বাইয়ের রীচ এলাকার এক বহুতল কমপ্লেক্সে-র দশম তলায় থাকতেন। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী,
দীর্ঘদিন ধরে কেউ ব্যাপারটা বুঝতেই পারেননি, যে তিনি মারা গেছেন।
আশা সাহানী-র এই মৃত্যু, আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে আমাদের সামাজিক বিবেক-বিবেচনা-বোধ-বুদ্ধি একেবারে তলানিতে এসে পৌঁছে গেছে। কিছুই আর
অবশিষ্ট নেই।
সুত্র : ইন্ডিয়া টুডে
0 Comments