খাবার স্যালাইন আবিষ্কারের গল্প




আহমেদ হোসেইন আল আরফাত ।।

জীবন রক্ষাকারী নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি সাধারণত জটিল হয়, ব্যয়বহুল হয় এবং অনেকের নাগালের বাইরে থাকে। কিন্তু এর ব্যতিক্রম ওআরএস বা ওরাল রিহাইড্রেসান সলিউশন। এখন সারা পৃথিবীর সবচেয়ে পরিচিত ঔষধ খাবার স্যালাইন বা ORS.

বিখ্যাত চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেটের মতে, ORS আবিষ্কার, চিকিৎসার ক্ষেত্রে বি‌ংশ শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার। এই আবিষ্কারের পুরোধা আমরা বাঙালিরাই। তবে একক কোনো বিজ্ঞানীর কৃতিত্বে ORS উদ্ভাবিত হয়নি। বিষয়টি রিলে রেসের মতো।

তরল খাইয়ে কলেরা নিয়ন্ত্রণের গবেষণা প্রথম শুরু হয়েছিল ১৯৫২ সালে। কলকাতার চিত্তরঞ্জন হাসপাতালের কলেরা ওয়ার্ডের চিকিৎসক হেমেন্দ্র নাথ চ্যাটার্জির লেখা প্রবন্ধে দেখা বলা হয়, ১৯৫২ ও ১৯৫৩ সালে কলেরায় আক্রান্ত কিছু রোগীর বমি ও পানিশূন্যতা দূর করার জন্য অ্যাভোমিন ট্যাবলেটের সঙ্গে পাথরকুচিপাতার রস খাওয়ানো হয়েছিল এবং তাতে ফলও পাওয়া গিয়েছিল।

পরবর্তীতে US naval academyর ডাক্তার captain Phillip 1964 সালে ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের glucose মেশানো পানি খাইয়ে ভালো ফলাফল লাভ করেন।

এরপর ১৯৬৮ সালে মাঠপর্যায়ে ORS কার্যকারিতা নিয়ে পরীক্ষা শুরু করে Cholera Research Lab চাঁদপুরের মতলবে ও ঢাকায়। এর মূল গবেষক ছিলেন বিজ্ঞানী ডেভিড আর নেলিন ও রিচার্ড এ ক্যাস। ওই গবেষণার সঙ্গে রিসার্চ ফেলো হিসেবে যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ডা. রফিকুল ইসলাম ও মজিদ মোল্লা। তাঁদের গবেষণার ফলাফল নিয়ে ১৯৬৮ সালের আগস্টে যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেট-এ বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। তাতে বলা হয়, কলেরা রোগীদের গ্লুকোজ, সোডিয়াম ক্লোরাইড, সোডিয়াম বাই কার্বনেট ও পটাশিয়াম ক্লোরাইডের দ্রবণ খাওয়ানো হয়। এতে ভালো ফল পাওয়া যায়।

এরপর ডা. রফিকুল ইসলামের প্রচেষ্টায় 1981 সালে সর্বপ্রথম বাংলাদেশ সরকার ব্রাককে সাথে নিয়ে স্যালাইন উৎপাদন শুরু করে। যা পরবর্তীতে WHO এর সহযোগীতায় বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে

আহমেদ হোসেইন আল আরাফাত

ফেসবুক থেকে

Post a Comment

0 Comments